ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

কুতুবদিয়ায় সাবলেট ভাড়ায় আবাসিক কোয়ার্টার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

রিয়াদ মাহমুদ তানভীর, কুতুবদিয়া ::1-8 (1)

কুতুবদিয়া উপজেলার সরকারী আবাসিক কোয়ার্টার এখন রমরমা সাবলেট বাণিজ্যে রূপ নিয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারী আবাসিক কোয়ার্টার যথাক্রমে শিউলী, শিমুল, গোলাপ ও ডালিয়াসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন আবাসিক ভবনগুলো বহিরাগতদের আড্ডায় মেতে উঠেছে। এতেকরে আইন শৃংখলা পরিস্থিতিসহ মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে সাধারণ ভাড়াটিয়ারা। তাছাড়া বাসা বরাদ্দে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে কোন প্রকার ব্যবধানের তোয়াক্কা করছেনা সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা পরিষদ বাসা বরাদ্দ কমিটির সদস্য সচিবও স্বয়ং সাবলেট বাসায় দিনাতিপাত করছেন বলে জানা গেছে।

 গত ২৯ জানুয়ারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প (পজীপ)‘র মাঠ সংগঠক মোঃ নাসির উদ্দিন একই অফিসের উপ-প্রকল্প কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ও তার স্ত্রী ফাতেমা হাসানসহ অপর মাঠ সংগঠক নাসিমা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ১২ জানুয়ারী বিকাল ৪ টায় নাসিরের নামে বরাদ্দকৃত ডালিয়া ভবনের ফ্লাটে তার অনুপস্থিতিতে মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে বে-আইনীভাবে দিবালোকে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের মারাত্মক আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়।

 সূত্রে প্রকাশ, পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প (পজীপ)‘র উপ-প্রকল্প কর্মকর্তা মেহেদী হাসানের নামে বরাদ্দকৃত শিউলী ভবনের ২য় তলায় সাবলেট ভাড়ায় থাকেন বাসা বরাদ্দ কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মহসীন। পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প (পজীপ)‘র মাঠ সংগঠক নাসিমার নামে বরাদ্দকৃত ডালিয়া ভবনের ২য় তলায় মেহেদী হাসানের পরিবারসহ অন্যান্যরা দীর্ঘ দিনধরে সাবলেট করে যাচ্ছেন। শিমুল ভবনের নিচতলায় মাঠ সংগঠক আবুল হোসাইনের নামে বরাদ্দকৃত বাসায় নাসিমা আক্তার, কুতুবদিয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক সজল দাশ, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী, একই ভবনের ২য় তলায় সমবায় অফিসের সিরাজুল মনিরের নামে বরাদ্দকৃত বাসায় সাবলেটে বসবাস করছে “একটি বাড়ি একটি খামার” প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারী। গোলাপ ভবনের নিচতলার একটি ফ্লাটে পজীপ মাঠ সংগঠক মনিপুলার চাকমার নামে বরাদ্দকৃত বাসায় বাস করছেন কুতুবদিয়া কলেজের প্রভাষক মিজান, একই ভবনের ২য় তলায় একটি ফ্লাট পজীপের রবিউল ইসলামের নামে বরাদ্দ থাকলেও সেখানে বসবাস করছে আদালতের বেঞ্চসহকারীসহ আরো কয়েকজন। ডালিয়া ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট ইউএনও অফিসের মিজবাহ উদ্দিনের নামে বরাদ্দ থাকলেও তাতে বাস করছেন ডিংগা ভাংগা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজগর হোসেন, একই ভবনের ২য় তলার আরও একটি ফ্লাটে পজীপের নাসিমার নামে বরাদ্দকৃত বাসায় সাবলেটে বসবাস করছেন কুতুবদিয়া থানার এসআই বদিউল আলম ও পজীপ কর্মকর্তা মেহেদী হাসানের পরিবার।

 উপজেলা প্রকৌশলী ও বাসা বরাদ্দ কমিটির সদস্য সচিব মোঃ মহসীনের সাথে কথা হলে তার বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন পজীপের এক কর্মকর্তার সাথে অপর এক কর্মচারীর আÍকলহের জেরে ওই ঘঠনাটি ঘটেছে, উপজেলা পরিষদের স্টাফ ছাড়া অন্য কেউ থাকার নিয়ম নেই। তবে এক জনের নামে বরাদ্ধ নিয়ে কয়েক জন মিলে সাবলেট হিসেবে বাস করলে অনেক আর্থিক সাশ্রয় হয় বলে কথাটি স্বীকার করেন।

 উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী বলেন, পজীপ কর্মচারী নাছির উদ্দিনের একটি অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। অভিযোগটি খতিয়ে দেখার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করেন।

 এ বিষয়ে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও কুতুবদিয়া কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুছ ছাত্তার বলেন, উপজেলা স্টাফ কোয়ার্টারে একজনের নামে বরাদ্দকৃত বাসা অপরজনকে সাবলেট দেয়ার কোন নিয়ম নেই। এ অনিয়ম বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

পাঠকের মতামত: